লগ ইন
 

Logo

Logo

বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি সম্পর্কে

বিশ্বব্যাপী জনসংখা নিয়ন্ত্রনের আদর্শ প্রক্রিয়া হচ্ছে  পরিবার পরিকল্পনা। ১৯৪০ সালের শেষের দিক থেকে ১৯৫৫ সালের প্রথম দিকে সারা বাংলাদেশের মানুষের মৃত্যুর হার হ্রাস এবং শিশু জন্মের হার বৃদ্ধি পায় । এসময় সর্বপ্রথম পরিবার পরিকল্পনা ধারণাটি প্রবর্ত্ন করেন আমেরিকার মার্গারেট সাঙ্গার নামী এক উৎসগীপ্রান নার্স। এজন্য তাকে পরিবার পরিকল্পনার জননী বলা হয়। ১৯৫২ সালে ভারতের বোম্বে শহরে পৃথিবীর ১১ দেশের বিশেষ সমাজসেবীদের প্রচে্ষ্টায় International planned parenthood Federation (I.P.P.F) নামে পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে প্রথম সংস্থার সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

বিশ্বে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের দিকনির্দেশক মার্গারেট স্যাঙ্গার মা ও শিশু স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করনে সর্বপ্রথম ক্লিনিক ভিত্তিক কর্মসূচী গ্রহণ করেন। বাংলাদেশেও এভাবে বেসরকারি ভাবে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসুচি চালু হয়। ১৯৫৩ সালে তৎকালীন পাকিসত্মানে পরিবার পরিকল্পনার সুচনা হয়েছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রখ্যাত চিকিৎসক ও অধ্যাপক ডাঃ হুমায়রা সায়ীদ এর উদ্যোগে ১৯৫৩ সালের ২ মার্চ ঢাকায় পরিবার পরিকল্পনা সমিতি গঠিত হয়। এতে সহায়তা দেন ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সমাজসেবী আলমগীর এম এ কবির প্রমুখ।

১৯৫৪ সালে  International planned parenthood Federation (I.P.P.F)   এর সদস্য পদ লাভ করে। ১৯৬৪ সালের ১৫ই মে আইনের অধীনে নিবন্ধনকৃত হয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ১৮ই ফেব্রম্নয়ারী নাম পরিবর্তন করে ‘‘ বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি’’ রাখা হয়। বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি ১৯৭২ সালে International planned parenthood Federation (I.P.P.F)   এ সদস্যপদ লাভ করে। বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি একটি স্বেচ্ছাসেবী অরাজনৈতিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি একটি স্বেচ্ছাসেবী অলাভজনক, অরাজনৈতিক বেসরকারী সংস্থা। জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করে ছোট পরিবার গঠন এবং গনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষকে সুখী ও সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তা প্রদানে সহায়তা করা হলো এর প্রধান কাজ। বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি এর প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান লক্ষ্য  দুটিঃ-

  1. মা ও শিশু স্বাস্থের প্রয়োজনে ছোট পরিবার পরিকল্পিত পরিবার গঠনের ধারনাকে জনপ্রিয় করা এবং তা বাসত্মবায়নে তথ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা
  2. জাতীয় পর্যায়ে নীতি নির্ধারক ও জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা। যাতে সরকারি গঠিত নির্ধারন সম্ভব হয়।

এছাড়াও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির অন্যান্য উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য নিম্নরূপঃ

  1. মোট প্রজনন হার মা ও শিশু সমত্মানের মৃত্যু ও অসুস্থতা কমানো।
  2. যৌন, প্রজনন, স্বাস্থ্য সেবায় কিশোর কিশোরী, যুবকদের অংশগ্রহণ বাড়ানো।
  3. ক্ষমতা নিরপেক্ষতা ও মহিলাদের মাধ্যমে লৈঙ্গিক ক্ষমতা অর্জন করা।
  4. RTI/STI/STD/HIV/AIDS ইত্যাদি কমানো।
  5. ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাত কমানো  ও নিরাপদ এম আর নিশ্চিত করা।
  6. পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সুবিধায় পুরম্নষ গ্রহনকারীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা।
  7. মা ও শিশু কিশোরদের গুরুত্ব দেয়া ও জনগনের পুষ্টিমান উন্নয়ন।
  8. জনসংখ্যা সম্পদ ও পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্যতা অর্জন করা।
  9. নারী পুরম্নষের ক্ষমতা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা।

১০. বন্ধ্যা দম্পতিদের সমত্মান জন্মদানে সক্ষম করে তোলা।

১১. বিভিন্ন প্রকার টিকা ও ইনজেকশন গ্রহনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করা।

১২. পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহনের জন্য উৎসাহিত করা।

     পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা।