লগ ইন
 

Logo

Logo

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সম্পর্কে

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেক্ষাপট: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শুরম্ন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে। সে সময় বাংলাদেশ-ত্রিপুরা সীমান্তে “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১১টি সেক্টরের মধ্যে একমাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা পরিচালিত হাসপাতাল। যুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশী শরণার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় জনগণের চিকিৎসার ব্যবস্থা এখানে করা হতো। নেতাজী সুভাষ বোসের অন্যতম দেহরক্ষী হাবুল ব্যানার্জির (১৯৯৯ সালে প্রয়াত) ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরস্থ কাজু বাদাম বাগানের সাতটি টিলার একটিতে ছিল “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল”। ছন ও বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ৪৮০ বেডের হাসপাতাল ও অপারেশন থিয়েটার। হাসপাতালটি বাঁশ ও বেড়ার তৈরি হলেও এর অপারেশন থিয়েটারে অনেক বড় ও জটিল অপারেশন করা হতো।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেক্ষাপট:

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শুরম্ন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে। সে সময় বাংলাদেশ-ত্রিপুরা সীমান্তে “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১১টি সেক্টরের মধ্যে একমাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা পরিচালিত হাসপাতাল। যুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশী শরণার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় জনগণের চিকিৎসার ব্যবস্থা এখানে করা হতো। নেতাজী সুভাষ বোসের অন্যতম দেহরক্ষী হাবুল ব্যানার্জির (১৯৯৯ সালে প্রয়াত) ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরস্থ কাজু বাদাম বাগানের সাতটি টিলার একটিতে ছিল “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল”। ছন ও বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ৪৮০ বেডের হাসপাতাল ও অপারেশন থিয়েটার। হাসপাতালটি বাঁশ ও বেড়ার তৈরি হলেও এর অপারেশন থিয়েটারে অনেক বড় ও জটিল অপারেশন করা হতো।

 

যুদ্ধ শেষে জানুয়ারি (১৯৭২) মাসে “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” ঢাকায় ১৩২ ইস্কাটন রোডে স্থানানত্মর করা হয়। সে সময় স্বেচ্ছাসেবীরা দুটি গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয় উপলব্ধি করেন ¾

.         গ্রামে বসবাসকারী অধিকাংশ জনগণ ন্যূনতম আধুনিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত

  1. যুদ্ধই হোক বা শানিত্মসময়কালীনই হোক নারীদের সম্পৃক্তি ছাড়া কোনরূপ উন্নয়ন কর্মকান্ডে জয়লাভ সম্ভব নয়।

 

মাত্র ২২ জন কর্মী ও ৬টা তাবু নিয়ে সাভার থানার নলাম গ্রামের দক্ষিণপ্রানেত্ম উন্মুক্ত প্রানত্মরে বামনাবাড়ী মৌজায় দুইটি ইউনিয়নের ৫০,০০০ লোকের মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরম্ন। সে সময় কর্মীদের নিয়মিত খাবারের এমনকি পানীয় জলের নিশ্চয়তাও ছিল না। প্রায় এক কিলোমিটার দুরের নয়ারহাট বাজারের টিউবঅয়েল থেকে খাবার পানি আনতে হত। শুরম্ন থেকে পাথালিয়া এবং ধামসোনা ইউনিয়নের গ্রামগুলিতে স্বাস্থ্য কর্মীরা কাজ করত। এই সমসত্ম কমীরা প্যারামেডিক নামে পরিচিত ছিল। প্রয়োজনে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য রম্নগীদের গ্রাম থেকে তাবুতে পাঠিয়ে দেওয়া হত। তাবুতে অবস্থিত ডাক্তারগন রম্নগীদের চিকিৎসা ও ওষুধ দিত। স্বাস্থ্য বিভাগের এই প্রয়াশ দেখে দেশী বিদেশী অনেক দাতা গোষ্ঠী আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং তারা এই মহতি কাজকে বিসতৃত করার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সকলের সহযোগিতায় সাভার হাসপাতাল গড়ে উঠে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাতেও বিসতৃতি লাভ করে। বর্তমানে ২০ টি জেলার, ২৬টি উপজেলার, ৫৫টি ইউনিয়নের, ৬৪৭টি গ্রামের প্রায় ১.৫ মিলিয়ন উপকারভোগীকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা সহ অন্যান্য সেবা প্রদান করছে।

 

1. Background

Gonoshasthaya Kendra (GK): Gono means  People  Shasthaya means  Health  Kendra stands as Centre. GK has started its activities by establishing 480 beds Field Hospital named “Bangladesh Field Hospital” for the injured freedom fighters and Bangladeshi refugees during liberation war in 1971. It was located at Bisramganj of Tripura state of India adjacent to Bangladesh boarder.

After Independence 22 volunteers and doctors of Bangladesh Field Hospital had relocated the Hospital to 132 Eskaton Road, Dhaka. In April 27, 1972 it was moved to Savar 40 Km north of the capital Dhaka with the motto “Grame Cholo Gram Goro”  (Let us go to village and build village). They resided in a few tents at Baismail for achieving better healthcare services accessible to the majority of the people particularly women and children in liberated Bangladesh.

 

GK become a pioneer organization that provides innovative community and comprehensive health care services that is affordable and accessible to the rural masses in Bangladesh. The idea behind its involvement  during the liberation war of Bangladesh from Pakistan in 1971, when news of the armed struggle of the Bangladeshis led a group of about 1,000 expatriate doctors working in London to organize the Bangladesh Medical Association (BMA) with Ophthalmologist Dr.AH Sayedur Rahman as the President and Dr. Zafrullah Chowdhury a vascular surgeon as the General Secretary  in early May in 1971. BMA-UK sent two doctors from this association, Dr. Zafrullah Chowdhury and Dr. M. A. Mobin go to India who visited the major frontiers of the war and established 480 bedded Bangladesh Field Hospital at Melaghar in Tripura State of India with the help of the Provisional Government. Army Doctor (Ms) Sitara Begum was appointed as Commanding Officer of the hospital. 

Medical students and young School and College girls in Bangladesh Field Hospital had provided good surgical and medical care for wounded freedom fighters and also to Bangladeshi refugees. After independence of Bangladesh, the lessons learned from treating the Freedom Fighters and refugees proved invaluable in developing the character of today’s GK. 

2. GK Vissions 

GK started with two visions firstly, “the fate of the poor decides fate of the country, “Secondly, development of the country depends on development of women.” 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র: যাত্রা শুরম্ন ‘গ্রামে চল গ্রাম গড়’ মূলমন্ত্র দিয়ে
 

১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসের শেষ রবিবার “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রূপান্তর হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অনেকের কাছে ‘জিকে’ (GK) নামে পরিচিতি লাভ করে। যাত্রা শুরম্ন হয় “গ্রামে চল গ্রাম গড়” মূলমন্ত্র নিয়ে। লক্ষণীয়, হুকুম দিয়ে ‘গ্রামে যাও’ নির্দেশ দিয়ে গ্রাম গড়া নয়। শিক্ষিত কর্মীদের উদ্যোগী হয়ে নিজেরা গ্রামে গিয়ে, গ্রামে বসবাস করে, গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে কর্মপদ্ধতি ও কর্মসূচি নির্বাচনই ছিল মূল লক্ষ্য। তাই উদ্যোক্তাদের সকলেই শুরম্ন থেকেই সাভারের গ্রামে অবস্থান করেছেন। অনেকে তাঁবুতে থেকেছেন, রাত্রিযাপন করেছেন।

 

মূল উদ্দেশ্য 

১.    সুলভে সার্বিক ও সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার পদ্ধতি খুঁজে বের করা।

২.   সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়ন করা এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণের দৃঢ় প্রচেষ্টা চালানো।

৩.   দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নতির জন্য কিছু দৃষ্টানত্মমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা, যার সফলতা ভবিষ্যতে সরকারী বা বেসরকারী কর্মকান্ড ও পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করতে পারে।

৪.    প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা এবং স্বনির্ভরতা অর্জন।

স্বাস্থ্য কার্যক্রম:

 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিষ্ঠিত ”বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” থেকে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশী শরণার্থীদের মাঝে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করাই ছিল স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান কাজ।

উদ্দেশ্য:

  1. সার্বিক ও সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার পদ্ধতি খুঁজে বের করা।
  2. তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে মানুষের ঘরের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়া।

       3. সুলভে উন্নত মানের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা।

চর অঞ্চলের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প নিম্নরূপ:

 

নয়টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান সেন্টার ও একটি রেফারেল হাসপাতাল নিয়ে চরস্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প গঠিত। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলিতে দুটি শয্যা সহ সাধারন ছোট অপারেশনের সুবিধা রয়েছে। ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিমের মাধ্যমে ক্যাম্প করে বিভিন্ন রোগ যেমন: প্রসূতি সেবা, কার্ডিওলজি চিকিৎসা, দন্ত সেবা, চোখের চিকিৎসা অপারেশন সহ, ছোট ছোট অপারেশন, ফিজিওথেরাপী ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা করা হয়। এই মেডিকেল টিমের সঙ্গে দন্ত পরীক্ষা আধুনিক যন্ত্রপাতি, চোখ চিকিৎসার আধুনিক যন্ত্রপাতি, আল্ট্রাসনো মেসিন, কার্ডিওগ্রাফী মেসিন, প্যাথলজি সামগ্রী সহ একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও অন্যা ডাক্তার থাকে। নিয়মিতভাবে চক্ষুক্যাম্প করে চোখের আপারেশন করা হয়।

 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বিশেষায়িত ভ্রাম্যামান মেডিকেল ক্যাম্প:

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র শুরম্ন থেকেই সাধারন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য স্থায়ী চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান টিমের মাধ্যমে গণমানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। বিভিন্ন সময় সময় বন্যা, সিডর, আইলা, খরা সহ নানা দূর্যোগকালীন সময়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যান্য সেবার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র্র ১২ সেপ্টেম্বর২০১১ তারিখ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন দূর্গম চরাঞ্চলে ভ্রাম্যমান চিকিৎসার এক নব দিগন্ত সূচনা করে। প্রচলিত অর্থে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা সেবা বলতে বহিঃবিভাগে রোগী দেখা বুঝালেও এদিন থেকে শুরম্ন হয় বিশেষায়িত ভ্রাম্যমান মোবাইল ক্যাম্প। এই ক্যাম্পগুলিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, মাইক্রোবায়োলজিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ফার্মাসিস্ট, নবীন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সকল  আধুনিক সুযোগ সুবিধার সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎআ সেবা প্রদান করা হয়। যদিও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্রমান চিকিৎসা সেবা দিয়েছে কিন্তু বৃহৎ পরিসরে সমস্ত সুবিধার সমন্বয় ঘটিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা গলাচিপা থেকেই শুরম্ন হয়। গলাচিপা ক্যাম্পের সফলতার ধারাবিহকতায় পরবর্তীতে চুনারম্ন ঘাটের আশা কমপেস্নক্স, সিলেটের বিশ্বনাথ, ফেনীর সোনাগাজী ভোলা জেলার চরফ্যাশন এবং নরসিংদীতে ক্যাম্প করাহয়। 

 

বিশেষায়িত ভ্রাম্যামান মেডিকেল ক্যাম্পের লক্ষ্য:

  • সুবিধা বঞ্চিত মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।
  • দূর্গম অঞ্চলে মানুষের কাছে আধুনিক চিকিৎসা সেবা পৌছে দেয়া।
  • মহিলা রোগী যারা বিভিন্ন কারনে দূরে যেতে পারে না তাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।
  • আধুনিক যন্ত্রপাািতর মাধ্যমে দ্রূত রোগ নির্ণয় করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া।
  • ভ্রাম্যমান চিকিৎসা সেবার জাতীয় ও অন্তর্জাতিক ভাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।